উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিতে উত্তরাঞ্চলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলাসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীর পানিও বেড়েছে। এতে এসব এলাকায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সমকালের অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
রংপুর :উজানের ঢলে পানি বেড়ে রংপুরে তিস্তা তীরবর্তী ১১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত, দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। পানির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না মানুষ। জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে মুষলধারে বৃষ্টি আর উজানের পানিতে তিস্তার পানি বেড়ে যায়। লালমনিরহাটের দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গঙ্গাচড়া উপজেলার নদীর তীরবর্তী লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চর শংকরদহ, চর ইচলী, বাগেরহাট, জয়রামওঝা, ইসবকুল গ্রামের ১০ হাজার পরিবার ও আলমবিদিতর ইউনিয়নের সাউথপাড়া, পাইকান, ব্যাংকপাড়া, হাজীপাড়া, আলমবিদিতর গ্রামের ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে পাটসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম :গত দু’দিন ধরে কখনও থেমে থেমে, হালকা এবং কখনও ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর ফলে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত খাদ্যগুদাম চত্বর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর, দক্ষিণ হাসপাতালপাড়া, রৌমারীপাড়া, নাজিরা সরকারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী মো. রোমানুজ্জামান জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারসহ নদনদীগুলোতে আবারও পানি বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার ফেরিঘাট পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) :টানা বর্ষণ ও যাদুকাটা নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে যাদুকাটা নদী দিয়ে নেমে আসা ঢলে প্লাবিত নদীর তীরবর্তী বালিজুরী, আনোয়ারপুর, দক্ষিণকূল, মাহতাবপুর, সোহালা, পিরিজপুর, লোহাজুরী চরারপাড়, ঘাঘরা, পাতারি চিকসা, পাতারগাঁও, রসুলপুর, গাজীপুর, ঠাকাঠুকিয়া, বড়খলাসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম। সেই সঙ্গে ঢলের পানি বেশকিছু বিদ্যালয়ের আঙিনায় প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। এতে বিদ্যালয় যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।